চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার একটি আদালত যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সুমন (৩৫) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এই রায় দেন।
সুমন ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় দোষী সাব্যস্ত সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে ওয়ারেন্টে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূ মনি আক্তার ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা। পেশায় তিনি একটি চা বাগানে কাজ করতেন। মনি আক্তারের সুমনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের বিয়ে হয় ২০১০ সালে, এবং তারপর থেকে সুমন যৌতুকের দাবিতে মনি আক্তারের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। ৩০শে অক্টোবর, ২০২১ তারিখে, সুমন তার স্ত্রী মনি এবং চাচাতো ভাই মো. টিপুকে নিয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে যায়। সেখানে সে তার শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক চায়। সে অপারগতা প্রকাশ করলে, সুমন তার স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ির দিকে রওনা দেয়।
পথে কালীকুম্ভ এলাকায় সে তার বাইক থামিয়ে মনিকে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়, তার মুখ বেঁধে মারধর শুরু করে। মারধরে মনি আক্তারের হাত ও পা ভেঙে যায়। ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। মোটরসাইকেলের সাইলেন্সার ধরে মনির বাম চোখে আঘাত করে এবং মনির বুকে আঘাত করে। এরপর, তার স্বামী সুমন মনি আক্তারকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে এবং সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার কয়েকদিন পর ২৫শে নভেম্বর হাসপাতালে মনি আক্তারের মৃত্যু হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, ঘটনার পর, ভুক্তভোগী মনি আক্তারের ভাই আব্বাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্ত সুমন আদালতে তার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে আদালতে অভিযুক্ত সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচার চলাকালীন ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। অভিযুক্তকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, ২০০০ এর ১১(ক) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।